মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা-কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা

বর্তমান সময়ে মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা থাকতে হবে। অন্যথায় মাদকের অভিশাপ এমনভাবে সমাজকে গ্রাস করবে যা অকল্পনীয়। তবে আমরা চাইলে সামাজিক ভাবে প্রতিরোধ গড়ে মাদক নির্মূল করতে পারবো। তবে তার আগে আমাদের মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা গুলো জানতে হবে।

মাদকের আসক্তি ও বর্তমান সমাজ

অতীতের দিন গুলোর তুলনায় বর্তমানে মাদক যে কতটা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আর মাদকের ভয়াল থাবায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে উঠতি বয়সি তরুন প্রজন্মের ক্ষেত্রে। কারণ, যে সময়টা তাদের ফুলের মতো জীবনযাত্রার শুরু হয় ঠিক তখন থেকে তারা আসক্ত হয়ে পড়ছে মাদকের প্রতি। 

তবে মাদকের এই ভয়াল থাবা থেকে তরুন প্রজন্মকে বাঁচানোর অন্যতম উপায় হলো সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধি করা। আর আমরা যদি সবাই একসাথে সামাজিক ভাবে মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করি তাহলে আমরা অবশ্যই মাদক নিধন করে তরুন প্রজন্মকে সঠিক পথে ধাবিত করতে পারবো। 

তাই আপনার মতো মানুষের জন্য নিচে মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা গুলো তুলে ধরা হলো। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা পালন করার চেস্টা করবেন।

মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতার ভূমিকা

আমরা সবাই জানি যে, মাদকে আসক্ত ব্যক্তি শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলেনা। বরং একটি মাদকে আসক্ত ব্যক্তির প্রভাব পড়ে পরিবারের উপর, সমাজের উপর। তাই এই মাদক প্রতিরোধে সবার আগে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। 

হয়তবা আপনার মনে প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে, মাদক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা কিভাবে ভূমিকা রাখবে। আর এমন প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো সামাজিক সচেতনতার মধ্যে এমন কিছু কাজ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে অবশ্যই মাদক প্রতিরোধ করা সম্ভব। সেগুলো হলো, 

০১-মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরা 

বর্তমান বিশ্বে যত প্রকারের মাদক আছে তার সবগুলোতেই ক্ষতির দিক রয়েছে। কারণ, আপনি এমন কোনো মাদক দেখাতে পারবেন না যেগুলো আমাদের মানব শরীরের জন্য উপকারী। আর সামাজিক ভাবে আমরা যেটা করতে পারি সেটি হলো, মাদকের যেসব ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে সেগুলো সবার মধ্যে তুলে ধরা। 

সেক্ষেত্রে আমরা যদি আলোচনা সভা, সেমিনার এর মাধ্যমে মাদকের ক্ষতিকর দিক গুলো তুলে ধরি তাহলে সব স্তরের মানুষ সে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকবে। যার ফলে কোনো ব্যক্তি যখন মাদক সেবনে আগ্রহী হবে তখন সে একবার হলেও এর ক্ষতিকর দিক গুলো ভাববে। আর এই ভাবনা থেকে অনেক মানুষ মাদক সেবন থেকে দুরে থাকবে। 

০২- বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি

পৃথিবীতে সব স্তরের মানুষ বিনোদন পেতে চায়। আর তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক মানুষ আছেন যারা মাদক সেবন করার মাধ্যমে বিনোদন উপভোগ করতে পছন্দ করে। কিন্তুু আমরা যদি সামাজিক ভাবে সেই সকল মানুষের জন্য বিকল্প বিনোদন করার মাধ্যম তৈরি করতে পারি তাহলে মাদকাসক্তির প্রভাব অনেক অনেক অংশে কমে যাবে। 

উদাহরন হিসেবে বর্তমান সময়ে তরুন প্রজন্মের অন্যতম বিনোদন করার মাধ্যম হলো স্মার্টফোন। তবে আমরা যদি তাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিতে পারি তাহলে তারা আর মাদকের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবেনা। বরং তারা তাদের অবসর সময় গুলো খেলাধুলার মাধ্যমে ব্যয় করার সুযোগ পাবে। 

০৩-মাদকের সহজলভ্যতা রোধ

এটা সত্যি যে মাদক নিধন করা আমাদের দেশের প্রসাশনের কাজ। তবে সরকার চাইলে কি একাই মাদক দমন করতে পারবে? -হয়ত সরকার একাই নিধন করতে পারবে তবে সেটি সরকারের জন্য অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তুু আমরা যদি সামাজিক ভাবে সবাই একসাথে মাদক নিধনে কাজ করি তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। 

সেক্ষেত্রে আপনার এলাকায় যেসব মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে তাদেরকে উচ্ছেদ করতে হবে। অথবা যারা এই ধরনের ব্যবসার সাথে যুক্ত তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। আর যদি আমরা এই কাজটি করতে পারি তাহলে আমাদের সমাজের মানুষরা সহজে মাদক সংগ্রহ করতে পারবেনা। এর ফলে অটোমেটিক ভাবে অনেকেই মাদক সেবন করা বন্ধ করবে। 

০৪-পারিবারিক সচেতনতা বাড়ানো

একটু ভেবে দেখুন তো, আমরা যদি সবাই নিজের পরিবারের মানুষদের মাদক থেকে দুরে রাখতে পারি তাহলে বিষয়টা কেমন হয়! হুমম, আমরা যদি সত্যি এমনটা করতে পারি তাহলে আমাদের সমাজে মাদকে আসক্ত বলতে আর কাউকে খুজে পাওয়া যাবেনা। যদিওবা এমনটা সবার পক্ষে সম্ভব নয় তবুও চেস্টা করতে দোষ কিসের। 

আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা

মাদক প্রতিরোধ করার জন্য শুধুমাত্র সরকারের উপর তাকিয়ে থাকলে হবেনা। বরং আমরা যদি সবাই নিজ নিজ স্থান থেকে কাজ করি তাহলে খুব সহজে মাদক প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।