প্যানিক ডিসঅর্ডারের লক্ষণ ও প্রতিকার

প্যানিক ডিজঅর্ডার

প্যানিক ডিজঅর্ডার একটি উদ্বেগজনিত মানসিক রোগ যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি এক ধরনের মানসিক অবস্থার মধ্যে পড়ে যেখানে নিয়মিতভাবে প্যানিক অ্যাটাক (অত্যধিক আতঙ্ক) অনুভূত হয়। যেকোনো সময় একটি প্যানিক অ্যাটাক ঘটতে পারে, তবে যখন এটি বারবার হতে থাকে, তখন সেটিকে প্যানিক ডিজঅর্ডার বলা হয়।

প্যানিক ডিসঅর্ডার লক্ষণ

প্যানিক ডিজঅর্ডারের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা রোগীকে একেবারে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। এই লক্ষণগুলো একবারে বা ধীরে ধীরে দেখা দিতে পারে:

  • আতঙ্কের অনুভূতি: প্যানিক অ্যাটাকের সময়, রোগী মৃত্যুর ভয় বা বড় ধরনের বিপদ আসার অনুভূতি অনুভব করতে পারে।
  • মানসিক চাপ: অসহনীয় মানসিক চাপ অনুভূতি হতে পারে, যা শরীরের শারীরিক লক্ষণও প্রকাশ করতে পারে।
  • বুক ধড়ফড় করা: বুকের ধড়ফড় অনুভূতি হতে পারে, যা কারো কাছে হার্টের সমস্যা মনে হতে পারে।
  • অজ্ঞান হওয়ার অনুভূতি: রোগী মনে করতে পারে যে, সে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
  • ঘাম হওয়া ও মাথা ঘোরানো: প্যানিক অ্যাটাকের সময় ঘাম হতে পারে এবং মাথা ঘুরতে পারে।
  • বমি ভাব এবং পেটের অস্বস্তি: কিছু ক্ষেত্রে পেটের মধ্যে অস্বস্তি বা বমি ভাব হতে পারে।
  • বুকে ব্যথা: বুকে তীব্র ব্যথা হতে পারে, যা হার্টের রোগের মতো অনুভূত হয়।
  • নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার অনুভূতি: প্যানিক অ্যাটাকের সময় রোগী নিঃশ্বাস নিতে পারবে না এমন অনুভূতি পেতে পারে।
  • হাত-পা কাঁপতে পারে: হাত ও পায়ের অস্বাভাবিক কাঁপুনি হতে পারে।
  • হটফ্লাশ বা ঠান্ডা অনুভূতি: তীব্র গরম অথবা শীত অনুভূতি হতে পারে।
  • হাত-পায়ের আঙুলে ঝিমঝিম করা: আঙুলের ডগা ঝিমঝিম করে উঠতে পারে।

এই লক্ষণগুলো সাধারণত ৫ থেকে ২০ মিনিট স্থায়ী হতে পারে এবং তখন রোগী মনে করতে পারে সে মারা যাচ্ছে। যখন এই অ্যাটাকগুলো নিয়মিত হতে থাকে, তখন তাকে প্যানিক ডিজঅর্ডার বলা হয়।

প্যানিক ডিসঅর্ডার কারণ

প্যানিক ডিজঅর্ডারের একাধিক কারণ থাকতে পারে। এটি একটি বায়োসাইকোসোশ্যাল সমস্যার অংশ, যার মধ্যে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক কারণে বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি হতে পারে:

  • বায়োলজিক্যাল কারণ: মস্তিষ্কের কিছু রাসায়নিক উপাদানের ভারসাম্যহীনতা বা ঘাটতির কারণে প্যানিক ডিজঅর্ডার হতে পারে।
  • সাইকোলজিক্যাল কারণ: শৈশবের অভিজ্ঞতা, পারিবারিক সম্পর্ক, এবং সামাজিক পরিবেশও মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।
  • পারিবারিক ইতিহাস: যদি পরিবারের মধ্যে কেউ প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত থাকে, তবে পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • মানসিক চাপ বা ট্রমা: বড় দুর্ঘটনা, কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু, বা শারীরিক বা মানসিক নিপীড়নের ফলে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।
  • মাদক গ্রহণ: ক্যাফেইন বা অন্য কোনো উত্তেজক মাদক গ্রহণের ফলে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।

প্যানিক ডিসঅর্ডার চিকিৎসা

প্যানিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসা শুরু করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ হল, এটি নিশ্চিত করা যে রোগী আসলে প্যানিক অ্যাটাকের শিকার কিনা, নাকি অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা (যেমন হার্টের সমস্যা) রয়েছে। কারণ প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলি অনেক সময় হার্টের সমস্যার মতো হতে পারে। তাই, চিকিৎসকের মাধ্যমে সঠিক নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্যানিক অ্যাটাক নিশ্চিত হয়, তবে চিকিৎসকরা রোগীকে দ্রুত শান্ত করতে সাহায্য করবেন এবং শারীরিক লক্ষণগুলো (যেমন ঘাম হওয়া, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি) কমানোর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করবেন।

দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা

প্যানিক ডিজঅর্ডারের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু ধাপ অনুসরণ করা হয়:

  • কাউন্সেলিং (মনের প্রশান্তি): কাউন্সেলিং হল একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে রোগীকে মানসিকভাবে শান্ত করা হয়। এই প্রক্রিয়ায়, একজন পেশাদার কাউন্সেলর রোগীকে তার ভয়, উদ্বেগ এবং আতঙ্কের কারণগুলো বোঝার চেষ্টা করেন এবং মানসিক শান্তির উপায় প্রদান করেন। কাউন্সেলিং সেশনগুলিতে রোগী তার অনুভূতি, ভীতি এবং চিন্তা-ভাবনাগুলোর প্রতি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে নজর দিতে শেখেন।
  • বিহেভিয়ার থেরাপি ও কগনিটিভ থেরাপি (CBT): বিহেভিয়ার থেরাপি (Behavior Therapy) এবং কগনিটিভ থেরাপি (Cognitive Behavioral Therapy – CBT) দুটি অন্যতম কার্যকর পদ্ধতি প্যানিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায়। এই থেরাপিগুলোর মাধ্যমে রোগীকে তার প্যানিক অ্যাটাকের কারণ এবং উত্তেজনা সৃষ্টিকারী চিন্তাভাবনা চিহ্নিত করতে শেখানো হয়। সঠিকভাবে চিন্তা পরিবর্তন এবং নতুন আচরণগত প্যাটার্ন গড়ে তোলার মাধ্যমে রোগী ধীরে ধীরে তার আতঙ্ক ও উদ্বেগের প্রতি নিয়ন্ত্রণ পেতে সক্ষম হন।
  • ঔষধ (Medication): কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ ঔষধ ব্যবহার করা হয় যাতে রোগীর উদ্বেগ ও প্যানিক অ্যাটাকের শারীরিক লক্ষণগুলি কমানো যায়। এই ঔষধগুলো সাধারণত অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি (উদ্বেগ কমানোর) বা অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট (মনের অবস্থা ভাল করার) প্রভাব ফেলে। তবে, ঔষধের ব্যবহার চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হওয়া উচিত এবং এটি শুধুমাত্র রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী দেওয়া উচিত। ঔষধের মাধ্যমে শরীরের রাসায়নিক ভারসাম্য ফেরানোর চেষ্টা করা হয়, যাতে প্যানিক অ্যাটাক কমে যায়।

এই দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী শুধুমাত্র তার প্যানিক অ্যাটাক মোকাবিলা করতে সক্ষম হন না, বরং তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন এবং তাদের জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।

প্যানিক অ্যাটাক শুরু হলে কী করবেন?

প্যানিক অ্যাটাক শুরু হলে, রোগীকে দ্রুত শান্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এটি একটি অত্যন্ত আতঙ্কজনক পরিস্থিতি হতে পারে, এবং রোগী যদি উত্তেজিত হন, তবে তা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। নিচে দেওয়া হল কীভাবে প্যানিক অ্যাটাকের সময় রোগীকে সাহায্য করতে পারেন:

  • রোগীকে শান্ত করার চেষ্টা করুন: প্যানিক অ্যাটাকের সময় রোগী খুব আতঙ্কিত এবং ভয় পেতে পারেন। তাদের শান্ত করার জন্য, আপনি নরম এবং সহানুভূতিশীলভাবে কথা বলতে পারেন। “তুমি ঠিক আছো, কিছু হবে না।” এমন কথাগুলো তাদের মানসিক শান্তি এনে দিতে পারে। শান্ত থাকলে তাদের প্যানিক অ্যাটাক কমানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে।
  • পরিবারের সদস্যদেরও শান্ত থাকতে বলুন: পরিবারের সদস্যদেরও এই পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে বলুন। অস্থির বা বেশি উত্তেজিত হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাদেরও সাহায্য করুন যেন তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে এবং রোগীর পাশে থাকতে পারে।
  • দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলো হার্টের সমস্যার মতো হতে পারে, তাই দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফোনে বা কাছাকাছি কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দ্রুত যোগাযোগ করুন এবং নিশ্চিত করুন যে এটি সত্যিই প্যানিক অ্যাটাক নাকি অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা। প্যানিক অ্যাটাক নিশ্চিত হলে, চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা কীভাবে এটি মোকাবেলা করতে হবে, সেই নির্দেশনা দেবেন।
  • যদি রোগীর হার্ট বা ডায়াবেটিস সমস্যা থাকে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন: যদি রোগীর আগের কোনো হার্ট বা ডায়াবেটিস সমস্যা থাকে, তবে প্রথমে তাদের সেই চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কখনো কখনো প্যানিক অ্যাটাক হার্ট অ্যাটাকের মতো অনুভূতি তৈরি করতে পারে, তাই হার্টের সমস্যা নিয়ে যদি কোনো পূর্ব ইতিহাস থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে প্যানিক অ্যাটাকের সময় রোগীকে সহায়তা করা সহজ হবে এবং তার স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।

প্যানিক অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়

প্যানিক অ্যাটাক প্রতিরোধের জন্য কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ রয়েছে যা একজন ব্যক্তি বা রোগী গ্রহণ করতে পারেন। নিচে সেগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:

  • সচেতনতা বৃদ্ধি: প্যানিক অ্যাটাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগী যদি জানেন যে প্যানিক অ্যাটাক শুধু হৃদরোগের কারণে ঘটে না, তাহলে তাদের আতঙ্ক কিছুটা কমে যাবে। সচেতনতা রোগীকে প্যানিক অ্যাটাকের সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
  • কাউন্সেলিং সেশন: প্যানিক অ্যাটাকের পুনরাবৃত্তি রোধে কাউন্সেলিং সেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করলে রোগী তার মানসিক অবস্থা এবং আতঙ্কের মোকাবিলায় উপযুক্ত কৌশল শিখতে পারে।
  • কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT): কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি প্যানিক অ্যাটাকের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে এবং রোগীকে এসব কারণে কিভাবে মানসিক চাপ কমানো যায় তা শেখায়। এই থেরাপি দ্বারা রোগী তার নেতিবাচক চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে এবং সেগুলোকে বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করতে পারে।
  • শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখা: নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং শিথিলতার কৌশল যেমন যোগ, প্রণায়াম ইত্যাদি প্যানিক অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই ব্যায়ামগুলো মানসিক শান্তি বজায় রাখতে এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
  • মিথ্যা চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি: প্যানিক অ্যাটাকের সময় অনেক সময় ব্যক্তি মিথ্যা চিন্তা করে যেমন “আমি মারা যাচ্ছি” বা “এটি হার্ট অ্যাটাক”। কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির মাধ্যমে এই ধরনের ভুল ধারণা দূর করা যায় এবং রোগী তাদের আতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে।
  • সামাজিক ও পারিবারিক সমর্থন: পরিবারের সদস্যদের সহানুভূতি এবং সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একে অপরকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে রোগী নিজের অনুভূতি এবং চিন্তাগুলোর প্রতি খোলামেলা হতে পারে। পরিবারের সহায়তা রোগীকে শান্ত হতে সাহায্য করে এবং তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
  • মেডিকেল চেকআপ: প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণ যদি স্বাস্থ্যের অন্য কোনো সমস্যা (যেমন হার্ট বা শ্বাসকষ্ট) থেকে আসে, তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে তা চিকিৎসকের কাছ থেকে নির্ধারণ করা এবং যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
  • মাদক বা ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা: মাদক বা অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ প্যানিক অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই ধরনের উত্তেজক পদার্থ এড়িয়ে চলা রোগীর উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
  • ঘুমের সঠিক প্যাটার্ন অনুসরণ করা: পর্যাপ্ত এবং ভালো ঘুমও প্যানিক অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে। ঘুমের অভাব মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই নিয়মিত এবং শান্তিপূর্ণ ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
  • যোগাযোগের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানো: একে অপরের সাথে খোলামেলা কথা বলা এবং চিন্তা শেয়ার করা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই, আপনার অনুভূতি এবং চিন্তাগুলি আপনার পরিবারের সদস্য বা বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে দ্বিধা করবেন না।

কেন OmegaPointBD.org অন্য সাইটগুলোর চেয়ে ভালো?

আমাদের ওয়েবসাইট OmegaPointBD.org আপনাকে শুধুমাত্র প্যানিক ডিজঅর্ডার সম্পর্কিত তথ্য দেয় না, বরং আপনার মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ এবং থেরাপি সেবা প্রদান করে। আমরা একটি পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য প্ল্যাটফর্ম যা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, থেরাপি সেশন এবং গাইডলাইন প্রদান করে, যাতে আপনি দ্রুত সুস্থ হতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটে আপনি পাবেন:

  • বিশেষজ্ঞদের সেবা: অভিজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং চিকিৎসা।
  • আস্থাশীল থেরাপি সেশন: প্রতিটি রোগীর জন্য কাস্টমাইজড থেরাপি।
  • বিশ্বস্ত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য: আপনার প্যানিক ডিজঅর্ডার বা অন্য মানসিক সমস্যার জন্য সঠিক এবং কার্যকর সমাধান।

মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকর উপায় সম্পর্কে জানতে, আমাদের বিশদ ব্লগ “মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির ৫ কার্যকর উপায়” পড়ুন। এটি আপনাকে সহায়ক পরামর্শ প্রদান করবে।

উপসংহার: 

প্যানিক ডিসঅর্ডার একটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক এবং উদ্বেগজনিত সমস্যা, যা জীবনের গুণগতমানকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে সঠিক সচেতনতা, চিকিৎসা এবং থেরাপির মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্যানিক অ্যাটাক বা প্যানিক ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলোর প্রতি মনোযোগী হলে এবং সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে, রোগী দ্রুত সুস্থ হতে পারে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ এই সমস্যায় ভুগছেন, আমাদের ওয়েবসাইট OmegaPointBD.org-এ পরামর্শ ও সাহায্য নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপযুক্ত এবং প্রমাণিত সমাধান প্রদান করতে প্রস্তুত।

প্যানিক ডিসঅর্ডার  সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: প্যানিক ডিসঅর্ডার কী?
উত্তর: প্যানিক ডিজঅর্ডার একটি মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা, যেখানে ব্যক্তি আকস্মিকভাবে এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে তীব্র ভীতির অনুভূতি অনুভব করেন। এটি সাধারণত শরীরের বিভিন্ন শারীরিক লক্ষণ তৈরি করে, যেমন ঘাম, বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।

প্রশ্ন ২: প্যানিক অ্যাটাক (Panic Attack) কী?
উত্তর: প্যানিক অ্যাটাক হল প্যানিক ডিজঅর্ডারের একটি প্রধান লক্ষণ, যেখানে একজন ব্যক্তি আচমকা তীব্র ভীতির অনুভূতি অনুভব করেন। এই অবস্থায় শারীরিক লক্ষণ যেমন হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া, শ্বাসকষ্ট, ঘাম, দুর্বলতা এবং ভয়াবহতা অনুভব করা হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ৩: প্যানিক ডিজঅর্ডার কেন হয়?
উত্তর: প্যানিক ডিজঅর্ডার এর সঠিক কারণ জানা যায়নি, তবে এটি জেনেটিক, পরিবেশগত, এবং মানসিক চাপের কারণে হতে পারে। অতিরিক্ত চাপ, শারীরিক বা মানসিক অবস্থা এবং পারিবারিক ইতিহাস এর কিছু সাধারণ কারণ হতে পারে।

প্রশ্ন ৪: প্যানিক ডিজঅর্ডারের উপসর্গ কী কী?
উত্তর:

  • আকস্মিক ভীতির অনুভূতি
  • হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া
  • শ্বাসকষ্ট
  • ঘাম
  • হাত ও পা শীতল বা অস্বস্তিকর অনুভূতি
  • মাথা ঘুরানো বা অজ্ঞান হওয়ার ভয়
  • বমি বমি ভাব
  • বুকের মধ্যস্থানে অস্বস্তি

প্রশ্ন ৫: প্যানিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসা কীভাবে হয়?
উত্তর: প্যানিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায় সাধারণত দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়:

  1. মনোচিকিৎসা (Cognitive Behavioral Therapy)
  2. ঔষধ – কিছু সময় চিকিৎসক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি মেডিকেশন সুপারিশ করেন।

প্রশ্ন ৬: প্যানিক ডিজঅর্ডার কি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য?
উত্তর: হ্যাঁ, সঠিক চিকিৎসা এবং সমর্থন পেলে প্যানিক ডিজঅর্ডার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে, চিকিৎসা বা থেরাপি অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন ৭: প্যানিক ডিজঅর্ডার কি জীবনের অন্যান্য অংশকে প্রভাবিত করতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, প্যানিক ডিজঅর্ডার যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে এটি ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবন, কাজের কর্মক্ষমতা এবং সামাজিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। তবে সঠিক চিকিৎসায় এ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।

প্রশ্ন ৮: আমি যদি প্যানিক অ্যাটাক অনুভব করি তবে কী করা উচিত?
উত্তর:

  • গা শিথিল করুন এবং শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।
  • গভীর শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।
  • যেকোনো ধরনের চাপ বা উদ্বেগ দূর করতে নিজেকে একটি নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান।
  • যদি অস্বস্তি আরও বাড়ে তবে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।